বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিবিদ্ধ আরাফাত (১২) নামে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। বুলেটের আঘাতে তার পাঁজরের হাড় ও মেরুদণ্ড ভেঙে গিয়েছিল। নষ্ট হয় একটি কিডনিও। তবে হাসপাতালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান তিনি। রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) তিনি মারা যান।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সেল সম্পাদক (দপ্তর সেল) জাহিদ আহসানের দেওয়া এক শোকবার্তায় এ তথ্য জানা গেছে। রোববার রাত ১টা ২০ মিনিটে বার্তাটি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফেসবুক পেজে পোস্ট করা হয়।
শোকবার্তায় জানানো হয়েছে, রোববার রাত ১০টা ৩০ মিনিটে ১২ বছর বয়সের কিশোর গণঅভ্যুত্থানের যোদ্ধা, গুলিবিদ্ধ আরাফাত শাহাদাতবরণ করেছেন। রাজধানীর সিএমএইচে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কার্ডিয়াক এরেস্ট (হৃৎযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে) হয়ে তিনি মারা যায়।
পরে রাত ২টা ৫ মিনিটে এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ফেসবুক পেজে আরেকটি পোস্ট দেয়।
এতে বলা হয়, শহিদ মোঃ আরাফাত (১২) মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ছিলেন। মাদরাসা থেকে নাজেরা শেষ করেন আরাফাত। পবিত্র কোরআন শরীফের তিন পারা মুখস্থ করেছিলেন তিনি। এরপর কিতাব বিভাগের এবতেদিয়ায় অধ্যয়নরত ছিলেন।
সোমবার বিকেল ৩টায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে আরাফাতের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। উত্তরা ১৪নং সেক্টর কবরস্থানে সোমবার তাকে দাফন করা হয়। রাজধানীর উত্তরা জামিয়া রওজাতুল উলুম মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল আরাফাত।
গত ৫ আগস্ট উত্তরার আজমপুর পূর্ব থানার সামনে আন্দোলনে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। এরপর তাকে প্রথমে উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে নিলে সেখান থেকে ফেরত দেওয়া হয়। এরপর নেওয়া হয় কুর্মিটোলায়। সেখান থেকেও তাকে ফেরত দিলে পরবর্তীতে সিএমএইচে ভর্তি করা হয়। তিন মাস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর রবিবার তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
ফেসবুক পেজে আরও বলা হয়, আরাফাতের বাম পাজরের দিক দিয়ে বুলেট ঢুকে পাজরের হাড় ও মেরুদণ্ড ভেঙে ডান পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। এতে তার একটি কিডনিও নষ্ট হয়ে যায়।
উন্নত চিকিৎসার জন্য আরাফাতকে ২৪ ডিসেম্বর এয়ার এ্যাম্বুলেন্সে দেশের বাইরে নেওয়ার কথা ছিল। এর আগেই তিনি মারা গেলেন।